প্রস্রাবের রাস্তায় সংক্রমণ হয় না এমন লোক বিরল। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সচরাচর সংক্রমণ বেশি হয়। এর কারণ হলো মেয়েদের মূত্রনালী ছেলেদের তুলনায় অনেক ছোট, পায়ুপথ এবং মূত্রনালীর দূরত্বও অনেক কম। ফলে জীবাণু খুব সহজে পায়ুপথ থেকে মূত্রনালীতে প্রবেশ করতে পারে এবং সংক্রমণ ঘটায়।
রোগের কারণ
1. প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগের কারণ হলো ই-কলাই নামক জীবাণু। এই জীবাণু অসতর্ক মুহূর্তে পায়ু লাকা থেকে মূত্রনালীতে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়। এ ছাড়া প্রোটিয়াস, সিউডোমোনাস, স্ট্রেপটোকক্কাই, স্ট্যাফাইলোকক্কাই, ক্লেবসিয়েলা প্রভৃতি জীবাণু মূত্রপথের সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে।
2. প্রস্রাব করার সময় মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি না হওয়া (এটা সাধারণত ঘটে প্রোস্টেটগ্রন্থি বড় হওয়া, মূত্রনালী সঙ্কীর্ণ হওয়া, মূত্রথলিতে স্নায়ুজনিত দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে)।
3. মূত্রতন্ত্রের পাথর, বাইরের কোনো বস্তু থাকলে কিংবা টিউমার হলে।
4. যৌনসঙ্গমের ফলে মূত্রনালীতে আঘাত লাগলে। (এ ক্ষেত্রে পেরিনিয়াম থেকে ব্যাকটেরিয়া মূত্রথলিতে স্থানান্তর হতে পারে)।
রোগ প্রতিরোধ
মেয়েরাই বারবার মূত্রপথের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। কিছু নিয়ম মেনে চললে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়:
1. দিনে কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করতে হবে
2. দিনে তিন ঘণ্টা অন্তর এবং ঘুমোতে যাওয়ার আগে নিয়মিত ভালোভাবে প্রস্রাব করতে হবে।
3. মূত্রথলি যেন সম্পূর্ণ খালি হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে।
4. প্রস্রাবের বেগ এলেই প্রস্রাব করতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি করতে হবে। প্রস্রাব করার পর প্রয়োজনে ১০-১৫ মিনিট পর আবার প্রস্রাব করতে হবে।
5. যৌন মিলনের আগে এবং পরে প্রস্রাব করে মূত্রথলি খালি করতে হবে।
6. প্রতিবার যৌন মিলনের পর ভালো করে পানি দিয়ে প্রস্রাবের স্থান পরিষ্কার করতে হবে।
7. যৌন মিলনের আগে প্রস্রাবের পথের চারপাশে ০.৫০% সেট্রিমাইড ক্রিম মেখে নিতে হবে।
8. যদি ওপরের ব্যবস্থায় কাজ না হয় তাহলে রাতে ঘুমানোর আগে প্রস্রাব করার পরে একটি একক মাত্রায় কোনো উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা যেতে পারে।
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
Home » ডাক্তারের পরামর্শ » মেয়েদের প্রস্রাবের সংক্রমণ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment